Photo: Syed Sheesh |
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডে যুবলীগের উদ্যোগে আয়োজিত ‘গ্লোবাল পিস: রোল অব শেখ হাসিনা’ শীর্ষক এক কনফারেন্সে এ কথা বলেন তিনি।
এর আগে ৫ দিনের যুক্তরাজ্য সফরের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে অক্সফোর্ড ইউনিয়নের উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে ‘বিশ্ব শান্তি’র ওপর বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা।
পরে রাতে অক্সফোর্ডের রেনডলফ হোটেলে যুবলীগের কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন তিনি।
বিশ্ব শান্তি, মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও দারিদ্র্যবিরোধী সংগ্রামে বিশেষ অবদান রাখায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত শেখ হাসিনার সম্মানে এ কনফারেন্সের আয়োজন করে যুবলীগ।
সন্ত্রাস, দারিদ্র্য, বঞ্চনা ও অসমতার বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রামের রোল মডেল আখ্যায়িত করে কনফারেন্সে শেখ হাসিনাকে ‘পিস থিঙ্কার’ ও ‘পিস বিল্ডার’ আখ্যায়িত করা হয়।
কনফারেন্সে মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গির কবির নানক।
মূল বক্তা হিসেবে আলোচনা উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারাকাত ও বাংলাদেশ ইনফরমেশন কমিশনের কমিশনার সাদেকা হালিম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে জ্বলে ওঠার যে শিা দিয়ে গেছেন আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সেই শিাকে কাজে লাগিয়েই বাংলাদেশের জনগণ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, আজকের কনফারেন্সে আমার সম্পর্কে যে প্রশংসাসূচক বক্তব্য এসেছে, আমি তার যোগ্য কি-না জানি না, তবে এতটুকু বলতে পারি যে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আমার যে রক্তের বন্ধন তা কোনও শক্তিই কোনও দিন বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের এ কনফারেন্সে ‘গ্লোবাল পিস’ সম্পর্কে যে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষেরই প্রতিধ্বনি বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, শান্তি ও ন্যায়বিচার অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। একটি ছাড়া অপরটি প্রতিষ্ঠা হয় না। বিশ্ব শান্তি নিশ্চিত করতে হলে প্রথমেই ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকারকে গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্রতা শান্তির পথে আরেকটি অন্যতম বাধা। পেটে ভাত না থাকলে শান্তির মধুর বাণী কোনও কাজে আসবে না। সুতরাং এ বিষয়গুলো যে একটি আরেকটির সঙ্গে জড়িত তা বিশ্ব সম্প্রদায়ের নেতাদের বুঝতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘকালের অভিজ্ঞতা আজ দারিদ্র্যবিরোধী সংগ্রামে কাজে লাগাতে হবে। মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তির যে অধিকার সেটি বাংলাদেশের জনগণের কাছে আবার ফিরিয়ে দিতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, জীবনে আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। জনগণের মুক্তিই আমার একমাত্র চাওয়া।
এ সময় তিনি তার সরকারের বিগত দুই বছরের শাসনামলে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন পদেেপর বর্ণনা দিয়ে বলেন, সন্ত্রাস, দারিদ্র্য, বঞ্চনা ও অসমতা বিরোধী সংগ্রামে সফল হওয়া একা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। সবার সম্মিলিত উদ্যোগেই এ সংগ্রাম এগিয়ে নিতে হবে।
এ সময় অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শেখ হাসিনাকে পিস থিঙ্কার ও পিস বিল্ডার আখ্যায়িত করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি করে প্রধানমন্ত্রী ওই অঞ্চলে যে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিয়েছেন তা বিশ্ববাসীর কাছে আজ প্রশংসিত।
আঞ্চলিক পর্যায়ে সার্ক শক্তিশালী করা, ভারতের সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী চুক্তি, ভারত-পাকিস্তানের পারমাণবিক উত্তেজনা কমাতে চেষ্টা এগুলো আঞ্চলিক পর্যায়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনার আগ্রহের প্রমাণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শান্তির দূত হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শেখ হাসিনার উজ্জ্বল ভাবমূর্তির কথা জানিয়ে নানক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বিশ্ব জনমত সৃষ্টির চেষ্টায় প্রধানমন্ত্রীর অকান্ত পরিশ্রম আজ বিশ্ববাসীর কাছে তাকে একটি সম্মানের আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২১ ঘণ্টা, ২৮ জানুয়ারী ২০১১
Link to article
0 comments:
Post a Comment