Photo: Syed Sheesh |
লন্ডনের অক্সেফোর্ড ইউনিয়নে বিশ্বশান্তির ওপর বক্তব্য রাখার সময় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি আরও নানা বিষয়ে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ক্রসফায়ার কিংবা এনকাউন্টারের নামে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কথা আমি অস্বীকার করছি না। তবে এর শুরু ২০০৪ সালে। এরপর বহু সময় পেরিয়ে গেছে। তাই এ ধরনের হত্যাকাণ্ড পুরোপুরি বন্ধ করতে সময় লাগবে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র্যাব) কর্মকাণ্ড মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে কি-না, এক ছাত্রের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা কোনও মানবাধিকার লঙ্ঘন নয় এবং এজন্যই যুক্তরাজ্যের সরকার র্যাবকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।’
এ সময় শ্রোতাদের মধ্য থেকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ধরন জানতে চেয়েও প্রশ্ন করা হয়।
এ ব্যাপারে শেখ হাসিনা বলেন,‘ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে বাংলাদেশ তৎপর। তাই ভারতের মতো বিশাল অর্থনীতির একটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ শক্তিশালী অর্থনৈতিক বন্ধনই গড়ে তুলতে চায়।’
কথা ওঠে পাকিস্তান প্রসঙ্গেও। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বন্যায় আমরা তাদের স্বাস্থ্যসেবাসহ ত্রাণ সাহায্য পাঠিয়েছি। কারণ আমরা জানি এ ধরনের বন্যা মোকাবিলার অভিজ্ঞতা তাদের নেই, যা আমাদের আছে।’
প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের আছে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, আছে সুন্দরতম সুন্দরবন, আছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।’
এ সময় শেখ হাসিনা বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের বাংলাদেশে এসে নিজের চোখে এর সৌন্দর্য উপভোগের আমন্ত্রণ জানান।
বৃহস্পতিবার লন্ডন সময় বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠান চলে (বাংলাদেশ রাত ৮টা থেকে ১০টা)।
অক্সেফোর্ড ইউনিয়নের উদ্যোগে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে একমাত্র বক্তা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শ্রোতাদের অধিকাংশই ছিলেন ইউরোপে পড়তে আসা বিভিন্ন দেশের ছাত্র-ছাত্রী।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অক্সেফোর্ড ইউনিয়নের সভাপতি জেমস লাংম্যান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে ২০ মিনিটের বক্তৃতা দেন। এরপর তিনি প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন।
ছাত্র-ছাত্রীরা তাকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মূলনীতি (সেকুলারিজম), মানবাধিকার, র্যাবের ক্রসফায়ারসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
সম্প্রতি র্যাব নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সে সম্পর্কে শ্রোতারা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন- ‘ব্রিটিশ সরকার র্যাবকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। র্যাব অবশ্যই মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।’
তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন- ‘যে বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত, ব্রিটিশ সরকার কি সে বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতে পারে?’
আদালতের রায়ে জিয়ার শাসনকাল অবৈধ ঘোষণা, ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক, বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়েও তিনি শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
২৭ জানুয়ারী ২০১১
Link to article
0 comments:
Post a Comment