বাংলানিউজের লন্ডন করেসপন্ডেন্টের সঙ্গে লর্ড অ্যাভিবুরি ( ফাইল ছবি: বাংলানিউজ) |
লর্ড অ্যাভেবুরি বলেন, বাংলাদেশের বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপন করেছেন সেগুলো নিয়ে এখনই ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন না। বাংলাদেশের বিরোধীদলীয় নেত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠকের ব্যাপারে ব্রিটেনের এই প্রবীণ রাজনীতিক ও মানবাধিকারকর্মী বলেন, ‘বাংলাদেশের বিরোধী দলের এই অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দেশটির সরকারের সঙ্গে আলোচনার আগে আমাদের সরকারের কাছে উত্থাপন করা ঠিক হবে না।’
তিনি বলেন, যেকোন রাজনৈতিক সমস্যাই নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। বাংলাদেশের প্রধান দুটো দলের মধ্যে এই সংস্কৃতি যতদিন চালু না হবে, ততদিন সমস্যা নিয়ে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ থাকবেই।
অ্যাভেবুরি বলেন, ‘সরকারের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন ইত্যাদি বিষয়ে যেসব অভিযোগ খালেদা জিয়া তুলেছেন, তা আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিলেছেন। তবে এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের মনোভাব জানতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপসহ আজকে তাদের যে অভিযোগ, বিএনপি সরকারের আমলেও একই অভিযোগ ছিল।’ তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ডঃ ওসমান ফারুক এর উত্তরে বলেছেন, তাদের সময় অবস্থা এত খারাপ ছিল না।
অ্যাভিবুরি জানান, রাজনীতিতে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ জানানোর একমাত্র মাধ্যম পার্লামেন্ট। বিরোধী দলকে পার্লামেন্টে গিয়ে তাদের অভিমত তুলে ধরতে হবে, এ বিষয়টির প্রতি তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন।
ব্রিটেনের এই প্রবীণ রাজনীতিক বলেন, পার্বত্য চট্রগ্রামে আদিবাসীদের প্রতি বৈষম্য, তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও এ বিষয়ে বিএনপির মনোভাবও জানতে চেয়েছেন তিনি। তবে এ নিয়ে সন্তোষজনক উত্তর পাননি।
বিরোধীদলীয় নেত্রীর মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি বিষয়ে লর্ড অ্যাভিবুরি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একমাত্র বাংলাদেশের জনগণ।
এদিকে, লর্ড অ্যাভিবুরির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিরোধীদলীয় নেত্রী সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উত্থাপন করেছেন সে বিষয়ে অ্যাভিবুরির সহকর্মী সুজিত সেনের সঙ্গে ঢাকা থেকে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।
সুজিত সেন বাংলানিউজকে জানান, ‘এইচ টি ইমাম বিরোধীদলীয় নেত্রীর অভিযোগকে ডাহা মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করে তাঁকে বলেছেন বিচার বিভাগকে নষ্ট করতে বিএনপি যা করে গেছে তা ইতিহাসের একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। এইচ টি ইমাম প্রশ্ন রাখেন খালেদা জিয়ার আমলে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা ও চট্রগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক ঘটনার প্রয়োজনীয় নথিপত্র গায়েব করা কী বিচার বিভাগের কর্মকাণ্ডে বাধা নয়?’
এইচ টি ইমাম বলেছেন, ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বিরোধীদলীয় নেত্রীর মুখে শোভা পায় না। তার আমলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কথা তিনি কি ভুলে গেছেন? সুজিত সেনের মাধ্যমে লর্ড অ্যাভিবুরিকে এইচ টি ইমাম বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির এই নিবিড় পর্যবেক্ষকের জন্যে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে রয়েছে একটি আলাদা শ্রদ্ধার আসন। বিরোধী দল বা কারো মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ শুনে এমন কোনো ভূমিকা রাখা তাঁর ঠিক নয়, যা বাংলাদেশের মানুষকে কষ্ট দেবে।’
সুজিত সেন বলেন, ‘বাংলাদেশের সুখ-দুঃখে লর্ড অ্যাভিবুরি সবসময়ই পাশে থাকতে চেয়েছেন। কোনো নির্দিষ্ট দলের পক্ষ হয়ে নয়, বাংলাদেশ ও দেশের জনগণের স্বার্থেই তিনি সব সময় ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেন।’
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৬ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১১
Link to Article
0 comments:
Post a Comment