লন্ডন: পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশন (সিএইচটি) তাদের কর্মকান্ডের আড়ালে এই অঞ্চলকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র করছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন ও পার্বত্য বাঙালি ছাত্রপরিষদ আনা এমন অভিযোগ দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখ্যান করেছেন পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশনের (সিএইচটি) কো চেয়ারম্যান ও ব্রিটেনের অল পার্টি পার্লামেন্টারি হিউম্যান রাইটস গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান লর্ড এরিক এভিবুরি।
ইন্টারন্যাশনেল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনরত ব্রিটেনের এই প্রবীন রাজনীতিক বুধবার বাংলানিউজে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিযোগের প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন, ঢাকার একটি জাতীয় দৈনিকের খবর অনুযায়ী সিএইচটি কমিশনের পার্বত্য এলাকা সফরকে কেন্দ্র করে পার্বত্য চট্রগামের দুটো সংগঠনের পক্ষ থেকে আমার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে ষড়যন্ত্রের যে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে তা আমি দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখ্যান করছি।
এভিবুরি আমি পূর্ব তিমুর বিষয়ক পার্লামেন্টারি গ্রুপ এবং ইউকে ইরিত্রিয়া সার্পোট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ছিলাম ইরিত্রিয়া স্বাধীন হওয়ার ২০ বছর আগে। সোমালী ভুমির স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের বর্তমান আন্দোলনেরও একজন সমর্থক আমি।
সিএইচটি কমিশনের কো চেয়ারম্যান এভিবুরি বিবৃতিতে বলেন, পার্বত্য চট্রগামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার বঞ্চিত জনগনের পক্ষে আমার সর্বাত্মক সমর্থন থাকলেও বাংলাদেশের এই অঞ্চলকে মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার কোন উদ্যোগে কখনই আমার সমর্থন বা সম্পৃক্ততা ছিল না এবং এখনও নেই। এধরনের কোন উদ্যোগের অস্থিত্ব সম্পর্কেও আমার কিছু জানা নেই। আমি শুধু ৯৭ সালে করা পার্বত্য শান্তি চুক্তির পুরোপুরি বাস্তবায়নের পক্ষেই কথা বলে যাচ্ছি।
এভিবুরি বলেন, যারা আমার বা আমার সহকর্মীদের বিরুদ্ধে পার্বত্য চট্রগামকে বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ তুলে অপপ্রচার করছেন তারা বাংলাদেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছেন। দক্ষিণ সুদান বা অন্যকোন রাষ্ট্রকে স্বাধীন করার পেছনে আমার দায় দায়িত্ব রয়েছে, এমন অভিযোগ অপরিশীলিত অত্যুক্তি বলেই আমি মনে করি। এমন অভিযোগ এনে যারা বিভ্রান্তি ছড়াতে চান, তারা মূল সমস্যা থেকে সংশ্লিষ্ট ভূখণ্ডের জনগণ ও বিশ্ববাসীর দৃষ্টি সরানোরই অপচেষ্টা করছেন বলে আমার ধারণা।
উল্লেখ্য, আগামী শনিবার পর্যন্ত সিএইচটি কমিশনের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের তিন পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন এলাকা সফর করার কর্মসূচিকে সামনে রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন ও পার্বত্য বাঙালি ছাত্রপরিষদসহ কয়েকটি সংগঠন আন্দোলনের কর্মসূচী পালন করছে।
পার্বত্য বাঙালি ছাত্রপরিষদ বৃহস্পতিবার রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, নাননিয়ারচর ও খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছে।
গত সোমবার সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন ও গত শনিবার পার্বত্য বাঙালি ছাত্রপরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার নেতারা সিএইচটি কমিশনের প্রবেশ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দেয়।
গত শুক্রবার খাগড়াছড়ি ও শনিবার বান্দরবানের পার্বত্য বাঙালি ছাত্রপরিষদ এ সফরের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেছে। এইসব কর্মসূচিতে আন্দোলনের নেতারা অভিযোগ করেন লর্ড এভিবুরি সিএইচটি কমিশনের নামে পার্বত্য চট্রগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চাইছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া স্মারকলিপিতে পার্বত্য বাঙালি ছাত্রপরিষদ নেতারা দাবি করেন, পূর্বতিমুর, দক্ষিণ সুদানকে স্বাধীন রাষ্ট্র বানানোর মূলহোতা পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশনের চেয়ারম্যান লর্ড এরিক এ্যাভিবুরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব নিয়েই প্রশ্ন তোলার দুঃসাহস দেখিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময় ০৮১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১১
0 comments:
Post a Comment