Syed Anas Pasha

Syed Anas Pasha

কিংস কলেজ হাসপাতালের ওপর ক্ষুব্ধ রাজ্জাক পরিবার


সৈয়দ আনাস পাশা, লন্ডন করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
কিংস কলেজ হাসপাতালের বাইরে সাংবাদিকদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন
প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাকের দুই ছেলে নাঈম রাজ্জাক ও ফাহিম রাজ্জাক।
কিংস কলেজ হাসপাতাল থেকে:  সদ্য প্রয়াত মুক্তিযুদ্ধের শীর্ষ সংগঠক ও আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের দুই ছেলে নাঈম রাজ্জাক ও ফাহিম রাজ্জাক বলেছেন, তাদের বাবার অসুস্থতার সময়ে সরকার ও দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ভূমিকায় তারা সন্তুষ্ট।

তবে কিংস কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লিভার ও কিডনিদাতাদের পরীক্ষা নীরিক্ষার দীর্ঘসূত্রতায় তারা প্রচণ্ডভাবে ক্ষুব্ধ।

বাবা আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুর পর কিংস কলেজ হাসপাতালের বাইরে এসে সাংবাদিকদের ব্রিফিং দেওয়ার সময় প্রয়াত নেতার এ দুই ছেলে উপরোক্ত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

নাঈম রাজ্জাক সাংবাদিকদের মাধ্যমে তার বাবার আত্মার মাগফেরাতের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, কিংস কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাকালীন গত প্রায় ৩ মাস সময়ে তাদের বাবার জন্যে তার রাজনৈতিক সহকর্মী, সাংবাদিক ও দেশবাসীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা তারা দেখেছেন তা তাদের অভিভূত করেছে।

প্রয়াত নেতার দুই ছেলে বলেন, দেশের মানুষের হৃদয়ে আমাদের বাবা যে কতটুকু স্থান করে নিয়েছিলেন তা আমরা উপলব্ধি করতে পেরেছি গত তিন মাস।

প্রয়াত নেতার চিকিৎসাকালে দল ও সরকারের পক্ষ থেকে কোনও খোঁজ খবর নেওয়া হয়নি- এমন অভিযোগের জবাবে বড় ছেলে নাঈম ও ছোট ছেলে ফাহিম একবাক্যে তা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এটি ভুল প্রচার।

নাঈম বলেন, প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের শীর্ষ নেতারা যেভাবে বাবার খোঁজ খবর নিয়েছেন, তা আমোদের জন্যে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

নাঈম আরও বলেন, ব্যক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রীর সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নেওয়া আমাদের সব সময় সাহস যুগিয়েছে। আমরা দল ও সরকারসহ দেশবাসীর কাছে এ বিষয়ে কৃতজ্ঞ।

এদিকে, লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপন বিষয়ে কিংস কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দীর্ঘসূত্রতায় প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাকের দুই ছেলে নাঈম ও ফাহিম।

তারা বলেন এই দীর্ঘসূত্রতা না হলে তাদের বাবা হয়তো আরও কিছুদিন বেঁচে থাকতেন।

সাংবাদিকদের ব্রিফিং শেষে বাংলানিউজের কাছে একান্ত প্রতিক্রিয়ায় নাঈম বলেন, কিডনি ও লিভার ডোনারদের পরীক্ষা নীরিক্ষা করতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সময় নিয়েছে ৫২ দিন। অথচ আমাদের কাছে তৈরি ছিলেন ৮জন ডোনার।

ছোট ছেলে ফাহিম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাংলানিউজকে বলেন, বাবা প্রতিদিনই আশায় আশায় থাকতেন কখন তার লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপনের অপারেশন করা হবে।

ফাহিম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাংলানিউজকে আরও বলেন, ১১ ডিসেম্বর অপারেশনের তারিখ ঠিক হওয়ার পর তোফায়েল চাচা যখন আসলেন, তখন বাবা ছিলেন খুবই উৎফুল্ল। আমাদের বলেছেন চিন্তা করো না, ২/১ দিনের মধ্যেই অপারেশনের কাজ শেষ হলে ভালো হয়ে উঠবো।

ফাহিম বলেন, কিন্তু ১১ ডিসেম্বরের একদিন আগেই যখন ডাক্তাররা জানিয়ে দিলেন, কিডনি ডোনারের কিডনি নেওয়া যাবে না, তখন থেকেই বাবা শারীরিক দিক থেকে দুর্বল হতে থাকেন। এরপরও আমরা আশা ছাড়িনি। পরবর্তী ডোনার সংগ্রহ করে অপেক্ষায় ছিলাম কখন ডাক্তাররা আবার অপারেশনের জন্যে ডাকবে। কিন্তু সে ডাকা আর হলো না।

ফাহিম রাজ্জাক এস ময় এমনই ক্ষুব্ধ ছিলেন যে, বাংলানিউজকে তিনি বলেন, কিংস কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত।

মামলা করবেন কি-না, এমন প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য নাঈম বলেন, সেটা অবশ্য পরের বিষয়, আগে বাবাকে সমাহিত করে নেই।

লন্ডনে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদুর রহমান খান সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাসপাতালেই ছিলেন। তিনি শোক সন্তপ্ত পরিবারের হয়ে সম্ভব সব কিছুই করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১১

0 comments:

Post a Comment

Popular Posts