লন্ডনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন
সৈয়দ আনাস পাশা, লন্ডন করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
লন্ডন: বাংলাদেশভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ‘প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশন’ এর উদ্যোগে বাংলাদেশের ৪০তম বিজয় দিবস উপলক্ষে লন্ডনে এক ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালিত হয়েছে এবার। আর এই কর্মসূচি লন্ডনের ভিন্ন ভাষাভাষি মানুষেরও ব্যাপক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
লন্ডনের কয়েকটি এলাকার মানুষ এবার ১৬ ডিসেম্বর সকালে উঠে দেখেছেন বিভিন্ন বাড়িঘরে পতপত করে উড়ছে বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা। পতাকাটি দেখে অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নতুন প্রজন্মও নিজেদের মধ্যে একটি তাগিদ অনুভব করেছেন নিজ পিতৃ ও মাতৃভূমির কষ্টকর জন্মলগ্নের কথা জানার।
এবারের বিজয় দিবসকে সামনে রেখে প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে লন্ডনের বিভিন্ন এলাকার বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রদান করা হয় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। আর ঐসব প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়ির মালিকদের অনুরোধ করা হয় ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ৪০তম বিজয় দিবসে যেন লাল-সবুজ এই পতাকাটি উত্তোলন করা হয় যার যার আঙ্গিনায়। বাংলাদেশের জন্মের ৪০তম বার্ষিকীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক বাংলাদেশভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশনের এই আহবানে লন্ডনের বিপুল সংখ্যক অধিবাসী সাড়া দিয়েছেন।
বাংলানিউজ প্রতিনিধি লন্ডনের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে দেখেছেন প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশনের এই ব্যতিক্রমী কর্মসূচি। পূর্ব লন্ডনের বাঙালি এলাকার বাইরেই মূলত এই কর্মসূচি পালিত হয়।
প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশনের অন্যতম কর্ণধার ফারজানা আনজুম বাংলানিউজকে বলেন, পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটস এমনিতেই তৃতীয় বাংলা হিসেবে ইতিমধ্যে পরিচিতি পেয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় দিবসগুলোতে এই এলাকা পুরো বাংলাদেশের রূপ নিয়ে আভির্ভূত হয় এলাকার বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সবার কাছে। বাংলাদেশের জাতীয় দিবসগুলোকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় এখানে। এই এলাকার অবাঙালি জনগণ বাংলাদেশের শহীদ দিবস, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসসহ অন্যান্য জাতীয় দিবসগুলোর সঙ্গে ব্যাপকভাবে পরিচিত। তাদের নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
‘প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশন বাঙালী অধ্যুষিত এলাকার বাইরে বাংলাদেশের সংগ্রামী ইমেজ ছড়িয়ে দিতে চায়। আর তাই বিজয় দিবসে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নিয়ে আমরা হাজির হয়েছিলাম ঐসব এলাকায় যেখানে বাঙালির চেয়ে অন্যান্য বর্ণের মানুষের বসবাস বেশি।’
ফারজানা আনজুম বলেন, ‘বংলাদেশের যে একটি সংগ্রামী ইতিহাস আছে, আছে একটি ইতিবাচক ইমেজ জাতীয় পতাকার দেওয়ার মাধ্যমে এটিই আমরা জানান দিতে চেয়েছি ভিন্ন ভাষাভাষি আমাদের মানুষদের। আমাদের ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তৈরি করে আমরা পৌঁছে দিয়েছি তাদের হাতে। অনুরোধ করেছি বিজয় দিবসে যাতে উত্তোলন করা হয় যার যার আঙ্গিনায়। বিপুল মানুষ আমাদের অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে তারা অনেকে জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশের গৌরভগাঁথা জন্মলগ্নের ইতিহাস।’
তিনি বলেন, ‘যদিও গত এক বছরে অন্যান্য জাতীয় দিবসগুলোতেও আমরা জাতীয় পতাকা দেওয়ার এই কর্মসূচি পালন করেছি। তবে ৪০তম বিজয় দিবসে এই পতাকা কর্মসূচি আগের চেয়ে ব্যাপক আকারে করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেই প্রাচ্ছায়া ফাউন্ডেশনের জন্ম। এই সংগঠনটির চেয়ারম্যান (অব.) সেনা কর্মকর্তা কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান। বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সমর্থক বলে যাকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়। বর্তমানে একজন সফল ব্যবসায়ী কর্নেল (অব.) শহীদ উদ্দিন খান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সমর্থক সংগঠন, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজের অবহেলিত মানুষদের সহযোগিতার উদ্দেশ্যে গঠন করেন প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশন।
লন্ডনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন বিষয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানরত শহীদ উদ্দিন খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৪০ বছর অতিক্রান্ত হলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আবারও শাণিত হচ্ছে আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রিয় পরযায়ে। দেশের মোট জনসংখ্যার অন্যতম শক্তিশালী অংশ তরুণ প্রজন্ম আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে গর্ব করতে চায়। ৭১-এর
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের জন্যে যখন চলছে বহুমুখী ষড়যন্ত্র, ঠিক তখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের কারও ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই।’
শহীদ খান বলেন, ‘প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভিত্তিক একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। আমরা আমাদের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাঙালিয়ানার কথা ছড়িয়ে চাই সারা বিশ্বে, যাতে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কেউ বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে। আর সেই দিক বিবেচনায় রেখেই ৪০তম বিজয় বার্ষিকীতে লন্ডনে পতাকা উত্তোলনের এই কর্মসূচি।
বাংলাদেশ সময়: ২২০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১১
লন্ডনের কয়েকটি এলাকার মানুষ এবার ১৬ ডিসেম্বর সকালে উঠে দেখেছেন বিভিন্ন বাড়িঘরে পতপত করে উড়ছে বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা। পতাকাটি দেখে অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নতুন প্রজন্মও নিজেদের মধ্যে একটি তাগিদ অনুভব করেছেন নিজ পিতৃ ও মাতৃভূমির কষ্টকর জন্মলগ্নের কথা জানার।
এবারের বিজয় দিবসকে সামনে রেখে প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে লন্ডনের বিভিন্ন এলাকার বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রদান করা হয় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। আর ঐসব প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়ির মালিকদের অনুরোধ করা হয় ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ৪০তম বিজয় দিবসে যেন লাল-সবুজ এই পতাকাটি উত্তোলন করা হয় যার যার আঙ্গিনায়। বাংলাদেশের জন্মের ৪০তম বার্ষিকীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক বাংলাদেশভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশনের এই আহবানে লন্ডনের বিপুল সংখ্যক অধিবাসী সাড়া দিয়েছেন।
বাংলানিউজ প্রতিনিধি লন্ডনের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে দেখেছেন প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশনের এই ব্যতিক্রমী কর্মসূচি। পূর্ব লন্ডনের বাঙালি এলাকার বাইরেই মূলত এই কর্মসূচি পালিত হয়।
প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশনের অন্যতম কর্ণধার ফারজানা আনজুম বাংলানিউজকে বলেন, পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটস এমনিতেই তৃতীয় বাংলা হিসেবে ইতিমধ্যে পরিচিতি পেয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় দিবসগুলোতে এই এলাকা পুরো বাংলাদেশের রূপ নিয়ে আভির্ভূত হয় এলাকার বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সবার কাছে। বাংলাদেশের জাতীয় দিবসগুলোকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় এখানে। এই এলাকার অবাঙালি জনগণ বাংলাদেশের শহীদ দিবস, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসসহ অন্যান্য জাতীয় দিবসগুলোর সঙ্গে ব্যাপকভাবে পরিচিত। তাদের নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
‘প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশন বাঙালী অধ্যুষিত এলাকার বাইরে বাংলাদেশের সংগ্রামী ইমেজ ছড়িয়ে দিতে চায়। আর তাই বিজয় দিবসে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নিয়ে আমরা হাজির হয়েছিলাম ঐসব এলাকায় যেখানে বাঙালির চেয়ে অন্যান্য বর্ণের মানুষের বসবাস বেশি।’
ফারজানা আনজুম বলেন, ‘বংলাদেশের যে একটি সংগ্রামী ইতিহাস আছে, আছে একটি ইতিবাচক ইমেজ জাতীয় পতাকার দেওয়ার মাধ্যমে এটিই আমরা জানান দিতে চেয়েছি ভিন্ন ভাষাভাষি আমাদের মানুষদের। আমাদের ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তৈরি করে আমরা পৌঁছে দিয়েছি তাদের হাতে। অনুরোধ করেছি বিজয় দিবসে যাতে উত্তোলন করা হয় যার যার আঙ্গিনায়। বিপুল মানুষ আমাদের অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে তারা অনেকে জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশের গৌরভগাঁথা জন্মলগ্নের ইতিহাস।’
তিনি বলেন, ‘যদিও গত এক বছরে অন্যান্য জাতীয় দিবসগুলোতেও আমরা জাতীয় পতাকা দেওয়ার এই কর্মসূচি পালন করেছি। তবে ৪০তম বিজয় দিবসে এই পতাকা কর্মসূচি আগের চেয়ে ব্যাপক আকারে করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেই প্রাচ্ছায়া ফাউন্ডেশনের জন্ম। এই সংগঠনটির চেয়ারম্যান (অব.) সেনা কর্মকর্তা কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান। বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সমর্থক বলে যাকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়। বর্তমানে একজন সফল ব্যবসায়ী কর্নেল (অব.) শহীদ উদ্দিন খান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সমর্থক সংগঠন, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজের অবহেলিত মানুষদের সহযোগিতার উদ্দেশ্যে গঠন করেন প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশন।
লন্ডনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন বিষয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানরত শহীদ উদ্দিন খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৪০ বছর অতিক্রান্ত হলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আবারও শাণিত হচ্ছে আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রিয় পরযায়ে। দেশের মোট জনসংখ্যার অন্যতম শক্তিশালী অংশ তরুণ প্রজন্ম আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে গর্ব করতে চায়। ৭১-এর
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের জন্যে যখন চলছে বহুমুখী ষড়যন্ত্র, ঠিক তখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের কারও ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই।’
শহীদ খান বলেন, ‘প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভিত্তিক একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। আমরা আমাদের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাঙালিয়ানার কথা ছড়িয়ে চাই সারা বিশ্বে, যাতে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কেউ বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে। আর সেই দিক বিবেচনায় রেখেই ৪০তম বিজয় বার্ষিকীতে লন্ডনে পতাকা উত্তোলনের এই কর্মসূচি।
বাংলাদেশ সময়: ২২০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১১
0 comments:
Post a Comment