ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ঘাতকদের শাস্তি: গাফফার চৌধুরী
সৈয়দ আনাস পাশা, লন্ডন করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ওয়াটার লিলি ব্যাঙ্কুইটিং হল, লন্ডন থেকে: বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সাহিত্যিক আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেছেন, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, তা মোকাবিলা করেই এই বিচার আদায় করতে হবে।
বুধবার পূর্ব লন্ডনের ওয়াটার লিলি ব্যাঙ্কুইটিং হলে ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্দোলনের ২০ বছর: সাফল্য ও প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল
গাফফার চৌধুরী এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশের নিজস্ব আইনে, নিজস্ব ট্রাইব্যুনাল গঠন করে শুরু করা বিচার প্রক্রিয়ার আন্তর্জাতিক মানের প্রশ্ন তুলে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন তাদের সমালোচনা করেন তিনি।‘পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে ঘৃণ্যতম গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের মানবাধিকারের প্রশ্ন আজ যারা উত্থাপন করেন, একাত্তরের ভিকটিমদের মানবাধিকার নিয়ে তাদের কণ্ঠ যখন সরব হতে দেখি না, তখন মনে হয় ডাল ম্যা কুচ কালা হ্যায়।’
গাফফার চৌধুরী বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্বের বড় বড় শক্তিই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু জনগণের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের মুখে কোনো শক্তিই বাংলাদেশের জন্ম ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতেও আমাদের ভরসা রাখতে হবে জনগণের ওপর।
দ্রুততার সঙ্গে বিচার কার্য সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ট্রাইব্যুনালকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গাফফার চৌধুরী বলেন, বিচার কার্যে দীর্ঘ কালক্ষেপণ যুদ্ধাপরাধীদের জন্যে ষড়যন্ত্রের বিভিন্ন সুযোগ তৈরি করতে পারে।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ মহাজোট ও ১৪দল ভুক্ত রাজনৈতিক দল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতায় আয়োজিত এই সমাবেশে মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির। বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন নির্মূল কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কর্নেল (অব) শহীদ উদ্দিন খান ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান শরীফ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সেলিম উদ্দিন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফারুক, নির্মূল কমিটির সহসভাপতি হরমুজ আলী, জাতীয় পার্টি সভাপতি মুজিবুর রহমান, জাসদ সভাপতি হারুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবুল মনসুর লীলু, কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ এনামুল ইসলাম, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠির সভাপতি ডা: রফিকুল হাসান খান জিন্না, সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান, ওয়ার্কার্স পার্টির ড: আখতার সোবহান মাশরুর, আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম এ রহিম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মারুফ চৌধুরী, নির্মূল কমিটি নেতা আনসার আহমেদ উল্লা, তাহের সংসদের সৈয়দ এলাহি হক সেলু এবং শহীদ সন্তান জামাল আহমদ খান
প্রমুখ।
লন্ডনকে যুদ্ধাপরাধ বিচার বাধাগ্রস্ত করতে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মূল কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করে মূল আলোচক শাহরিয়ার কবির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত সংগ্রহে এই লন্ডন যেমন বিরাট ভমিকা রেখেছে, ঠিক তেমনি এই লন্ডনেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আবার পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি নামে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। যে ষড়যন্ত্র এখনও অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ চল্লিশ বছরের অপেক্ষা ও শহীদ জননী জাহানারা ইমামের রেখে যাওয়া সংগঠন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির দীর্ঘ ২০ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের ফসল আজকের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই ট্রাইব্যুনালের সফলতার ওপর নির্ভর করে সেক্যুলার বাংলাদেশের অস্তিত্ব, একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের উজ্জ্বল
উপস্থিতি।
ট্রাইব্যুনালের আন্তর্জাতিক মান নিয়ে বিভিন্ন মহলের প্রশ্ন তোলার সমালোচনা করে শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘অভিযুক্তদের অবাধ সুযোগ সুবিধা দিয়েছে, বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের এমন আর কোনো ওয়ারক্রাইম ট্রাইব্যুনাল হয়েছে বলে আমার জানা নেই। ট্রাইব্যুনালের রায়ের পরও অভিযুক্তরা উচ্চ আদালতে আবেদনের সুযোগ পাবেন।
শাহরিয়ার কবির তার বক্তৃতায় বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণহত্যার সাক্ষী বাংলাদেশ। মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক জামায়াতে ইসলামীর সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ইতিহাসের এই নৃশংসতম গণহত্যা সংগঠিত করে বাংলাদেশে।
সমাবেশ শুরুর আগে মুক্তিযুদ্ধের কিছু দুর্লভ ছবি নিয়ে যুব ইউনিয়নের মুক্তিযুদ্ধের চিত্র প্রদর্শণী নামে একটি প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন আব্দুল গাফফার চৌধুরী ও শাহরিয়ার কবির।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১২
বুধবার পূর্ব লন্ডনের ওয়াটার লিলি ব্যাঙ্কুইটিং হলে ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্দোলনের ২০ বছর: সাফল্য ও প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল
গাফফার চৌধুরী এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশের নিজস্ব আইনে, নিজস্ব ট্রাইব্যুনাল গঠন করে শুরু করা বিচার প্রক্রিয়ার আন্তর্জাতিক মানের প্রশ্ন তুলে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন তাদের সমালোচনা করেন তিনি।‘পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে ঘৃণ্যতম গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের মানবাধিকারের প্রশ্ন আজ যারা উত্থাপন করেন, একাত্তরের ভিকটিমদের মানবাধিকার নিয়ে তাদের কণ্ঠ যখন সরব হতে দেখি না, তখন মনে হয় ডাল ম্যা কুচ কালা হ্যায়।’
গাফফার চৌধুরী বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্বের বড় বড় শক্তিই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু জনগণের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের মুখে কোনো শক্তিই বাংলাদেশের জন্ম ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতেও আমাদের ভরসা রাখতে হবে জনগণের ওপর।
দ্রুততার সঙ্গে বিচার কার্য সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ট্রাইব্যুনালকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গাফফার চৌধুরী বলেন, বিচার কার্যে দীর্ঘ কালক্ষেপণ যুদ্ধাপরাধীদের জন্যে ষড়যন্ত্রের বিভিন্ন সুযোগ তৈরি করতে পারে।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ মহাজোট ও ১৪দল ভুক্ত রাজনৈতিক দল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতায় আয়োজিত এই সমাবেশে মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির। বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন নির্মূল কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রচ্ছায়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কর্নেল (অব) শহীদ উদ্দিন খান ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান শরীফ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সেলিম উদ্দিন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফারুক, নির্মূল কমিটির সহসভাপতি হরমুজ আলী, জাতীয় পার্টি সভাপতি মুজিবুর রহমান, জাসদ সভাপতি হারুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবুল মনসুর লীলু, কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ এনামুল ইসলাম, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠির সভাপতি ডা: রফিকুল হাসান খান জিন্না, সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান, ওয়ার্কার্স পার্টির ড: আখতার সোবহান মাশরুর, আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম এ রহিম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মারুফ চৌধুরী, নির্মূল কমিটি নেতা আনসার আহমেদ উল্লা, তাহের সংসদের সৈয়দ এলাহি হক সেলু এবং শহীদ সন্তান জামাল আহমদ খান
প্রমুখ।
লন্ডনকে যুদ্ধাপরাধ বিচার বাধাগ্রস্ত করতে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মূল কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করে মূল আলোচক শাহরিয়ার কবির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত সংগ্রহে এই লন্ডন যেমন বিরাট ভমিকা রেখেছে, ঠিক তেমনি এই লন্ডনেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আবার পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি নামে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। যে ষড়যন্ত্র এখনও অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ চল্লিশ বছরের অপেক্ষা ও শহীদ জননী জাহানারা ইমামের রেখে যাওয়া সংগঠন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির দীর্ঘ ২০ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের ফসল আজকের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই ট্রাইব্যুনালের সফলতার ওপর নির্ভর করে সেক্যুলার বাংলাদেশের অস্তিত্ব, একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের উজ্জ্বল
উপস্থিতি।
ট্রাইব্যুনালের আন্তর্জাতিক মান নিয়ে বিভিন্ন মহলের প্রশ্ন তোলার সমালোচনা করে শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘অভিযুক্তদের অবাধ সুযোগ সুবিধা দিয়েছে, বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের এমন আর কোনো ওয়ারক্রাইম ট্রাইব্যুনাল হয়েছে বলে আমার জানা নেই। ট্রাইব্যুনালের রায়ের পরও অভিযুক্তরা উচ্চ আদালতে আবেদনের সুযোগ পাবেন।
শাহরিয়ার কবির তার বক্তৃতায় বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণহত্যার সাক্ষী বাংলাদেশ। মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক জামায়াতে ইসলামীর সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ইতিহাসের এই নৃশংসতম গণহত্যা সংগঠিত করে বাংলাদেশে।
সমাবেশ শুরুর আগে মুক্তিযুদ্ধের কিছু দুর্লভ ছবি নিয়ে যুব ইউনিয়নের মুক্তিযুদ্ধের চিত্র প্রদর্শণী নামে একটি প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন আব্দুল গাফফার চৌধুরী ও শাহরিয়ার কবির।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১২
0 comments:
Post a Comment