লন্ডনে উদযাপিত হচ্ছে ‘বেঙ্গলি হেরিটেজ মাস’
সৈয়দ আনাস পাশা, লন্ডন করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
লন্ডনের রাস্তায় হাটছে বাঙালি ছেলেমেয়েরা
|
লন্ডন: লন্ডনে পুরো মার্চ মাসব্যাপী উদযাপিত হচ্ছে ‘বেঙ্গলি হেরিটেজ মাস’। বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরে মার্চ মাসে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান উদযাপিত হচ্ছে লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসজুড়ে।
৩ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানমালা চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
বেঙ্গলি হেরিটেজ ট্রেজার হান্ট, ইন্সপাইরিং ওমেন, পোয়েট্রি ইভিনিং, ড্রামা, ডাইভার্স রুট অব দ্য বেঙ্গলি কালচার, গোল্ডেন টাইম, দ্য বেঙ্গলি ইস্ট অ্যান্ড এক্সিবিশন, মাই লাইফ স্টোরি, ফিল্ম অব রুহুল আমীন, বেঙ্গলি পোয়েট্রি এন্ড ড্রামা, ট্রেডস অব ফ্যাশন, আর্ট এটাক, স্নাপ সুট ৯: বাংলাটাউন, পিঠা মেলা, বেঙ্গলি কুকারি ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর: পোয়েট্রি চেইন নামে প্রতিদিনই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান।
‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর: পোয়েট্রি চেইন’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাপ্তি টানা হবে বেঙ্গলি হেরিটেজ মাসের।
টাওয়ার হ্যামলেটসের লকেল হিস্টরি লাইব্রেরি ও আরকাইভের উদ্যোগে আয়োজিত বেঙ্গলি হেরিটেজ মাস কর্মসূচির আয়োজনে সহযোগিতা করছে স্বাধীনতা ট্রাস্টসহ বিভিন্ন সংগঠন।
লকেল হিস্টরি লাইব্রেরি ও আরকাইভের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, টাওয়ার হ্যামলেটসের ইতিহাস সমৃদ্ধ করতে বাঙালির অবদানের স্বীকৃতি এবং সমৃদ্ধ বাঙালি সংস্কৃতি সম্পর্কে এ অঞ্চলের জনগণকে ধারণা দিতেই মার্চ মাসকে বেঙ্গলি হেরিটেজ মাস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
ব্রিটেনে বাঙালির প্রথম বসতি স্থাপনের ইতিহাস ও এতদঞ্চলের সাংস্কৃতিক উন্নয়নে তাদের ভূমিকা উদযাপন করার এ উদ্যোগ উপভোগ করতে নতুন প্রজন্মের বাঙালি বংশোদ্ভূতসহ মূলধারার বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রতিটি অনুষ্ঠানেই অংশ নিচ্ছেন।
ব্রিটেনে প্রথম প্রজন্মের বাঙালি অভিবাসীদের আগমনের ইতিহাস, কর্মকাণ্ড ও জীবনযাত্রা ইত্যাদি তুলে ধরা হচ্ছে বেঙ্গলি হেরিটেজ মাসে।
স্বাধীনতা ট্রাস্টের অন্যতম কর্ণধার আনসার আহমেদ উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাঙালির অহঙ্কারের মাস মার্চ মাস। বাঙালির এ স্বাধীনতার মাসটিকে বেঙ্গলি হেরিটেজ মাস হিসেবে ঘোষণা করে টাওয়ার হামলেটস লকেল হিস্টরি লাইব্রেরি ও আরকাইভ আমাদের কমিউনিটিকেই সম্মানিত করলো। বাঙালির ইতিহাস ও সংস্কৃতির উচ্চমান বিবেচনা করেই তারা এটি করেছে বলে আমার বিশ্বাস।’
‘বাঙালির সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতি মাল্টিকালচারাল ব্রিটিশ মূলধারাকেও সমৃদ্ধ করতে পারে, এটি অনুধাবন করতে পেরেছে বলেই লকেল হিস্টরি লাইব্রেরি ও আরকাইভ আমাদের স্বাধীনতার মাসটিকেই বেঙ্গলি হেরিটেজ মাস হিসেবে ঘোষণা করেছে’ এমনই ধারণা মানবাধিকার ও সংস্কৃতি কর্মী আনসার আহমেদ উল্লাহর।
আনসার বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের ব্রিটিশ বাঙালিরা জানেন না, ব্রিটেনে তাদের পূর্বপুরুষের টিকে থাকার নিরন্তর সংগ্রামের কথা। ব্রিটিশ মূলধারায় বাঙালি কমিউনিটির আজকের সম্মানজনক অবস্থানের পেছনে এক সময় জাহাজের নাবিক হিসেবে চাকরি নিয়ে আসা পূর্বপুরুষদের অবদান যে কতোটুকু, বাঙালির নতুন প্রজন্মসহ ব্রিটিশ মূলধারাকে সেটি জানাতেই বেঙ্গলি হেরিটেজ মাসের আয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে জাহাজের নাবিক হিসেবে যেসব বাঙালি দেশ ছেড়েছিলেন তারাই এক সময় ইস্ট ইন্ডিয়া ডক কোম্পানিতে কাজ নিয়ে এসে ওঠেন পূর্ব লন্ডনের ওয়াপিং ও শ্যাডওয়েল এলাকায়। এদের মাধ্যমেই টাওয়ার হ্যামলেটসে বাঙালির বসতি শুরু। ওই নাবিকরা তখন লস্কর নামেও পরিচিত ছিলেন।
এরপর গত শতাব্দীর মধ্যভাগের শেষের দিকে ভাওচার ভিসায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ব্যাপকভাবে ব্রিটেনে আসা শুরু হয় বাঙালিদের।’
আনসার বলেন, ‘প্রায় ৪০০ বছর ধরে বাঙালিরা ইস্ট এন্ডের টাওয়ার হ্যামলেটসে বসবাস করছেন। টাওয়ার হ্যামলেটসে বাঙালির বসবাস আজকের মতো সব সময় সুখকর ছিল না। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে করেই আজকের এই সুখকর বসবাস অর্জন করতে হয়েছে।’
‘বর্ণবাদ বিরোধী এ আন্দোলন বাঙালিদের দ্বারা শুরু হলেও এক পর্যায়ে এর সঙ্গে সংযুক্ত হয় শুভবুদ্ধি সম্পন্ন শ্বেতাঙ্গসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই আজ বর্ণবাদমুক্ত এই এলাকা।’
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘন্টা, মার্চ ০৯, ২০১২
৩ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানমালা চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
বেঙ্গলি হেরিটেজ ট্রেজার হান্ট, ইন্সপাইরিং ওমেন, পোয়েট্রি ইভিনিং, ড্রামা, ডাইভার্স রুট অব দ্য বেঙ্গলি কালচার, গোল্ডেন টাইম, দ্য বেঙ্গলি ইস্ট অ্যান্ড এক্সিবিশন, মাই লাইফ স্টোরি, ফিল্ম অব রুহুল আমীন, বেঙ্গলি পোয়েট্রি এন্ড ড্রামা, ট্রেডস অব ফ্যাশন, আর্ট এটাক, স্নাপ সুট ৯: বাংলাটাউন, পিঠা মেলা, বেঙ্গলি কুকারি ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর: পোয়েট্রি চেইন নামে প্রতিদিনই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান।
‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর: পোয়েট্রি চেইন’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাপ্তি টানা হবে বেঙ্গলি হেরিটেজ মাসের।
টাওয়ার হ্যামলেটসের লকেল হিস্টরি লাইব্রেরি ও আরকাইভের উদ্যোগে আয়োজিত বেঙ্গলি হেরিটেজ মাস কর্মসূচির আয়োজনে সহযোগিতা করছে স্বাধীনতা ট্রাস্টসহ বিভিন্ন সংগঠন।
লকেল হিস্টরি লাইব্রেরি ও আরকাইভের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, টাওয়ার হ্যামলেটসের ইতিহাস সমৃদ্ধ করতে বাঙালির অবদানের স্বীকৃতি এবং সমৃদ্ধ বাঙালি সংস্কৃতি সম্পর্কে এ অঞ্চলের জনগণকে ধারণা দিতেই মার্চ মাসকে বেঙ্গলি হেরিটেজ মাস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
ব্রিটেনে বাঙালির প্রথম বসতি স্থাপনের ইতিহাস ও এতদঞ্চলের সাংস্কৃতিক উন্নয়নে তাদের ভূমিকা উদযাপন করার এ উদ্যোগ উপভোগ করতে নতুন প্রজন্মের বাঙালি বংশোদ্ভূতসহ মূলধারার বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রতিটি অনুষ্ঠানেই অংশ নিচ্ছেন।
ব্রিটেনে প্রথম প্রজন্মের বাঙালি অভিবাসীদের আগমনের ইতিহাস, কর্মকাণ্ড ও জীবনযাত্রা ইত্যাদি তুলে ধরা হচ্ছে বেঙ্গলি হেরিটেজ মাসে।
স্বাধীনতা ট্রাস্টের অন্যতম কর্ণধার আনসার আহমেদ উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাঙালির অহঙ্কারের মাস মার্চ মাস। বাঙালির এ স্বাধীনতার মাসটিকে বেঙ্গলি হেরিটেজ মাস হিসেবে ঘোষণা করে টাওয়ার হামলেটস লকেল হিস্টরি লাইব্রেরি ও আরকাইভ আমাদের কমিউনিটিকেই সম্মানিত করলো। বাঙালির ইতিহাস ও সংস্কৃতির উচ্চমান বিবেচনা করেই তারা এটি করেছে বলে আমার বিশ্বাস।’
‘বাঙালির সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতি মাল্টিকালচারাল ব্রিটিশ মূলধারাকেও সমৃদ্ধ করতে পারে, এটি অনুধাবন করতে পেরেছে বলেই লকেল হিস্টরি লাইব্রেরি ও আরকাইভ আমাদের স্বাধীনতার মাসটিকেই বেঙ্গলি হেরিটেজ মাস হিসেবে ঘোষণা করেছে’ এমনই ধারণা মানবাধিকার ও সংস্কৃতি কর্মী আনসার আহমেদ উল্লাহর।
আনসার বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের ব্রিটিশ বাঙালিরা জানেন না, ব্রিটেনে তাদের পূর্বপুরুষের টিকে থাকার নিরন্তর সংগ্রামের কথা। ব্রিটিশ মূলধারায় বাঙালি কমিউনিটির আজকের সম্মানজনক অবস্থানের পেছনে এক সময় জাহাজের নাবিক হিসেবে চাকরি নিয়ে আসা পূর্বপুরুষদের অবদান যে কতোটুকু, বাঙালির নতুন প্রজন্মসহ ব্রিটিশ মূলধারাকে সেটি জানাতেই বেঙ্গলি হেরিটেজ মাসের আয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে জাহাজের নাবিক হিসেবে যেসব বাঙালি দেশ ছেড়েছিলেন তারাই এক সময় ইস্ট ইন্ডিয়া ডক কোম্পানিতে কাজ নিয়ে এসে ওঠেন পূর্ব লন্ডনের ওয়াপিং ও শ্যাডওয়েল এলাকায়। এদের মাধ্যমেই টাওয়ার হ্যামলেটসে বাঙালির বসতি শুরু। ওই নাবিকরা তখন লস্কর নামেও পরিচিত ছিলেন।
এরপর গত শতাব্দীর মধ্যভাগের শেষের দিকে ভাওচার ভিসায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ব্যাপকভাবে ব্রিটেনে আসা শুরু হয় বাঙালিদের।’
আনসার বলেন, ‘প্রায় ৪০০ বছর ধরে বাঙালিরা ইস্ট এন্ডের টাওয়ার হ্যামলেটসে বসবাস করছেন। টাওয়ার হ্যামলেটসে বাঙালির বসবাস আজকের মতো সব সময় সুখকর ছিল না। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে করেই আজকের এই সুখকর বসবাস অর্জন করতে হয়েছে।’
‘বর্ণবাদ বিরোধী এ আন্দোলন বাঙালিদের দ্বারা শুরু হলেও এক পর্যায়ে এর সঙ্গে সংযুক্ত হয় শুভবুদ্ধি সম্পন্ন শ্বেতাঙ্গসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই আজ বর্ণবাদমুক্ত এই এলাকা।’
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘন্টা, মার্চ ০৯, ২০১২
0 comments:
Post a Comment