ভাষা রক্ষায় একুশ বিশ্বব্যাপী প্রেরণা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সৈয়দ আনাস পাশা, লন্ডন করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
|
ওয়াটার লিলি ব্যাঙ্কুটিং হল, পূর্ব লন্ডন থেকে : একুশ আর শুধু বাঙালির নয়, একুশ এখন সারা বিশ্বের ভাষাপ্রেমিদের অনুপ্রেরণার উৎস। পৃথিবীর যেসব ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর ভাষা আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে, সেইসব জনগোষ্ঠীর বটবৃক্ষতুল্য অবলম্বন এখন বাঙালির একুশ।
মঙ্গলবার লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত একুশের আলোচনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপু মনি উপরোক্ত মন্তব্য করেন। মঙ্গলবার বিকেলে পূর্ব লন্ডনের ওয়াটার লিলি ব্যাঙ্কুইটিং হলে আয়োজিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাইকমিশনার ড. সাইদুর রহমান খান। আলোচনায় মূল
প্রবন্ধ উত্থাপন করেন সাংবাদিক বুলবুল হাসান। বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ব্রিটিশ এমপি মাইক্যাল বার্ন ও লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ বেলাল আহমেদ।
আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফারুক, আইরিশ নাগরিক ব্যারিস্টার নোরা শরীফ, সাপ্তাহিক জনমতের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা, নতুন প্রজন্মের ব্রিটিশ-বাঙালি সৈয়দ মাহাথির পাশা, আওয়ামী লীগ নেতা জালাল উদ্দিন ও জাসদ নেতা হারুনুর রশীদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ব্যস্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রী তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করে সভাস্থল ত্যাগ করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। বিশ্বের চতুর্থ সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর ভাষা বাংলা এখন বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।’
তিনি বলেন, ‘৯৬ এর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কানাডা প্রবাসী কয়েকজন ভাষা প্রেমিকের উদ্যোগে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা করার প্রক্রিয়া শুরু হলে তৎকালীন সরকার দ্রুততার সাথে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। আর এর ফলেই বাঙালির একুশ আজ বিশ্ব সম্প্রদায়ের সম্পত্তি।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের চতুর্থ সংখ্যা গরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর ভাষা হলেও বাংলা এখনও জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতি পায়নি।’
এ বিষয়ে বর্তমান সরকার প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই
আন্দোলনেও প্রবাসীদের এগিয়ে আসতে হবে। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসী বাঙালিরা যদি এ বিষয়ে জাতিসংঘে ক্যাম্পেইন করেন, তাহলে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলার জাতিসংঘ ভবনে প্রবেশ কেউ আটকাতে পারবে না।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ভাষা আন্দোলনের সাথে তার পারিবারিক সম্পৃক্ততার কথা স্মরণ করে জানান, তার বাবা মরহুম এমএ ওয়াদুদও ছিলেন একজন ভাষাবীর।’
তিনি বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের সাথে জড়িতদের আমি ভাষাসৈনিকের চেয়ে ভাষাবীর বলতেই পছন্দ করি এই কারনে যে, কোন একটি যুদ্ধে যারা জয়ী হন, তারা বীর হিসেবেই পরিচিতি পান। একজন সৈনিক তো যুদ্ধে হারতেও পারে, জিততেও পারে।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ আলোচক সাবেক ব্রিটিশ এমপি মাইক্যাল বার্ন বাঙালির ভাষা আন্দোলনকে পৃথিবীর ইতিহাসের এক ব্যতিক্রমী আন্দোলন হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ‘মুখের ভাষা রক্ষার জন্যে যে জাতি বুকের রক্ত দিতে পারে, তারা কোন সাধারণ জাতি নয়। সেই সংগ্রামী জাতিকে আমার স্যালুট।’
প্রেসক্লাব সভাপতি বেলাল আহমেদ শুধু মধ্যরাত নয়, ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর পর্যন্ত শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার ব্যবস্থা রাখার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘মধ্যরাতে আমাদের অনেকের সন্তানই শহীদ মিনারে আসতে পারে না। আর তারা যদি না আসে তাহলে আমাদের গৌরবময় একুশের ইতিহাস প্রজন্ম থেকে
প্রজন্মান্তরে কিভাবে পৌছবে?’
নতুন প্রজন্মের ব্রিটিশ বাঙালি মাহাথির পাশা তার বক্তব্যে একুশের অনুষ্ঠানে মাল্টিকালচারাল সমাবেশ ঘটানোর উপর গুরত্বারোপ করে বলে, বাঙালির একুশ যেহেতু এখন বিশ্বের প্রতিটি জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা রক্ষায় অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছে, সেহেতু সারা বিশ্বের বর্তমান প্রজন্মকে জানাতে হবে এই দিনটি তাদের উপহার দিয়েছেন আমাদেরই পূর্ব পুরুষ অর্থাৎ বাঙালিরা।
অনুষ্ঠানের সভাপতি হাইকমিশনার ড: সাইদুর রহমান খান সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি যতই এখন আন্তজার্তিক হোক, এটি যে বাঙালির সৃষ্ট তা কিন্তু বারবার বলতে হবে বিশ্ববাসীকে। আর এজন্যে একুশের সব কর্মকান্ডে বাঙালিকেই পালন করতে হবে মূল ভূমিকা।’
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১২
মঙ্গলবার লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত একুশের আলোচনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপু মনি উপরোক্ত মন্তব্য করেন। মঙ্গলবার বিকেলে পূর্ব লন্ডনের ওয়াটার লিলি ব্যাঙ্কুইটিং হলে আয়োজিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাইকমিশনার ড. সাইদুর রহমান খান। আলোচনায় মূল
প্রবন্ধ উত্থাপন করেন সাংবাদিক বুলবুল হাসান। বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ব্রিটিশ এমপি মাইক্যাল বার্ন ও লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ বেলাল আহমেদ।
আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফারুক, আইরিশ নাগরিক ব্যারিস্টার নোরা শরীফ, সাপ্তাহিক জনমতের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা, নতুন প্রজন্মের ব্রিটিশ-বাঙালি সৈয়দ মাহাথির পাশা, আওয়ামী লীগ নেতা জালাল উদ্দিন ও জাসদ নেতা হারুনুর রশীদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ব্যস্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রী তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করে সভাস্থল ত্যাগ করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। বিশ্বের চতুর্থ সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর ভাষা বাংলা এখন বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।’
তিনি বলেন, ‘৯৬ এর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কানাডা প্রবাসী কয়েকজন ভাষা প্রেমিকের উদ্যোগে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা করার প্রক্রিয়া শুরু হলে তৎকালীন সরকার দ্রুততার সাথে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। আর এর ফলেই বাঙালির একুশ আজ বিশ্ব সম্প্রদায়ের সম্পত্তি।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের চতুর্থ সংখ্যা গরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর ভাষা হলেও বাংলা এখনও জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতি পায়নি।’
এ বিষয়ে বর্তমান সরকার প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই
আন্দোলনেও প্রবাসীদের এগিয়ে আসতে হবে। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসী বাঙালিরা যদি এ বিষয়ে জাতিসংঘে ক্যাম্পেইন করেন, তাহলে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলার জাতিসংঘ ভবনে প্রবেশ কেউ আটকাতে পারবে না।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ভাষা আন্দোলনের সাথে তার পারিবারিক সম্পৃক্ততার কথা স্মরণ করে জানান, তার বাবা মরহুম এমএ ওয়াদুদও ছিলেন একজন ভাষাবীর।’
তিনি বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের সাথে জড়িতদের আমি ভাষাসৈনিকের চেয়ে ভাষাবীর বলতেই পছন্দ করি এই কারনে যে, কোন একটি যুদ্ধে যারা জয়ী হন, তারা বীর হিসেবেই পরিচিতি পান। একজন সৈনিক তো যুদ্ধে হারতেও পারে, জিততেও পারে।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ আলোচক সাবেক ব্রিটিশ এমপি মাইক্যাল বার্ন বাঙালির ভাষা আন্দোলনকে পৃথিবীর ইতিহাসের এক ব্যতিক্রমী আন্দোলন হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ‘মুখের ভাষা রক্ষার জন্যে যে জাতি বুকের রক্ত দিতে পারে, তারা কোন সাধারণ জাতি নয়। সেই সংগ্রামী জাতিকে আমার স্যালুট।’
প্রেসক্লাব সভাপতি বেলাল আহমেদ শুধু মধ্যরাত নয়, ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর পর্যন্ত শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার ব্যবস্থা রাখার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘মধ্যরাতে আমাদের অনেকের সন্তানই শহীদ মিনারে আসতে পারে না। আর তারা যদি না আসে তাহলে আমাদের গৌরবময় একুশের ইতিহাস প্রজন্ম থেকে
প্রজন্মান্তরে কিভাবে পৌছবে?’
নতুন প্রজন্মের ব্রিটিশ বাঙালি মাহাথির পাশা তার বক্তব্যে একুশের অনুষ্ঠানে মাল্টিকালচারাল সমাবেশ ঘটানোর উপর গুরত্বারোপ করে বলে, বাঙালির একুশ যেহেতু এখন বিশ্বের প্রতিটি জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা রক্ষায় অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছে, সেহেতু সারা বিশ্বের বর্তমান প্রজন্মকে জানাতে হবে এই দিনটি তাদের উপহার দিয়েছেন আমাদেরই পূর্ব পুরুষ অর্থাৎ বাঙালিরা।
অনুষ্ঠানের সভাপতি হাইকমিশনার ড: সাইদুর রহমান খান সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি যতই এখন আন্তজার্তিক হোক, এটি যে বাঙালির সৃষ্ট তা কিন্তু বারবার বলতে হবে বিশ্ববাসীকে। আর এজন্যে একুশের সব কর্মকান্ডে বাঙালিকেই পালন করতে হবে মূল ভূমিকা।’
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১২
0 comments:
Post a Comment