লন্ডনের সংহতি সমাবেশে পাকিস্তানিদের অংশগ্রহণ
সৈয়দ আনাস পাশা, লন্ডন করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
সংহতি সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন পাকিস্তানী তরুণ তাহসিন আহমেদ |
শনিবার লন্ডনের রেডব্রিজ টাউন হলের সামনে কর্মসূচীর প্রথম সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশে নারী, শিশু ও তরুণ প্রজন্মসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ যোগ দেন।
বাংলাদেশিদের দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত তাহসিন আহমেদসহ বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি নাগরিকও সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন তাহসিন আহমেদ।
মানবতার ইতিহাসে কলঙ্কজনক ইতিহাস ১৯৭১ এর গণহত্যার দায় পাকিস্তানী আর্মি ও কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের, আপামর জনগনের নয় বলে মন্তব্য করেন তাহসিন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগনের হৃদয়ে সদা জাগ্রত একাত্তরের ক্ষত আমাদেরও কষ্ট দেয়।”
তিনি বলেন, “যে মানবতাবিরোধী গণহত্যা এখনও বিভীষিকার মত ভেসে উঠে বাংলাদেশের হৃদয়ে, অপরাধীদের শাস্তি না হলে সেই বিভীষিকা তাড়া করতেই থাকবে সভ্য সমাজকে।”
তাহসিন বলেন, “পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করলেও একাত্তরের গণহত্যা নিয়ে কোন মন্তব্য করেন না, কারণ তিনি পাকিস্তানের জনগনের মনোভাবের ধার ধারেন না। শুধুই নিজেদের দলীয় ও রাজনৈতিক লাভ-লোকসানের হিসেব করেন পাকিস্তানের রাজনীতিকরা।”
তাহসিন আরও বলেন, “আর এই কারণেই এথনও পাকিস্তানের জনগনের দৈনন্দিন সমস্যার সমাধান করতে পারেননি পাকিস্তানের রাজনীতিকরা।
একাত্তরের গণহত্যার জন্যে বাংলাদেশিদের কাছে ক্ষমা চেয়ে তরুণ এ সাংবাদিক বলেন, “আমি জানি আমাদের পাকিস্তানের বর্তমান প্রজন্মের এই সামান্য উচ্চারণ ‘সরি’ বাংলাদেশের হৃদয়ের ক্ষত সরাতে কোনো প্রভাব রাখবে না যতক্ষন না পাকিস্তান রাষ্ট্রীয়ভাবে এই বিষয়টি বিবেচনায় না নেয়। এরপরও নিজেদের বিবেকের তাড়নায় আমরা তরুণ প্রজন্ম এটি বলতে চাই।”
তাহসিনের এই বক্তব্যের সময় সমাবেশে উপস্থিত কয়েকজন পাকিস্তানি উচ্চস্বরে বলেন, “যারা একাত্তরের গণহত্যার মত ক্রাইম করেছে, তার দায় পাকিস্তানের জনগনের নয়, ওই গণহত্যাকারী আর্মি ও রাজনীতিকদের। আমরা এদের ধিক্কার জানাই, বিচার চাই। বাংলাদেশের যারা ওই গণহত্যাকারীদের সহযোগিতা করেছে তাদের বিচার হচ্ছে বাংলাদেশে, এই বিচারে আমাদের সমর্থন রয়েছে।”
সংহতি সমাবেশের শেষ পর্যায়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে একাত্তরের শহীদ ও সাম্প্রতিক সময়ে জামায়া-শিবিরের সহিংসতায় নিহতদের স্মরণ করা হয়।
লন্ডন সময় বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পরযন্ত অনুষ্ঠিত এই সংহতি সমাবেশে জাগরণের গান পরিবেশন করেন লন্ডনের জনপ্রিয় শিল্পীরা।
সমাবেশে উপস্থিত সবাই একটি গণস্বাক্ষর বইয়ে স্বাক্ষর করে শাহবাগ আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।
সমাবেশের ঘোষণায় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় জামাত-শিবীরের সংখ্যালঘু হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এ বিষয়ে সোচ্চার হওয়ার জন্যে বিশ্ববাসীর প্রতি আহবান জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৩
Link to article
0 comments:
Post a Comment