লন্ডন প্রবাসী সাংবাদিক আব্দুল মতিনের ইন্তেকাল
লন্ডন করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
মঙ্গলবার লন্ডন সময় রাত সোয়া ৮টায় সাউথ লন্ডনের সেন্ট জর্জ হাসপাতালে বাধর্ক্যজনিত রোগের কারণে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি ৭৬ বছর বয়সী স্ত্রী ও এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।
দীর্ঘদিন যাবত ব্রিটেন প্রবাসী বাংলাদেশের এই প্রবীণ সাংবাদিক ২০০৯ সালে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্যে বাংলাদেশ সরকারের স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।
তার জন্ম ১৯২৪ সালে নোয়াখালী জেলার সদর থানার জামালপুর গ্রামে। ১৯৪০ সালে নোয়াখালী জেলা স্কুল থেকে মেট্রিক, ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএসসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর ইউনাইটেড প্রেস অব ইন্ডিয়ার ঢাকা সংবাদদাতা হিসেবে তার সাংবাদিকতা পেশা শুরু। ঢাকা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন তিনি। ১৯৬০ সালে দৈনিক আজাদের লন্ডন সংবাদদাতা হিসেবে শুরু হয় তার প্রবাসী জীবন। সেই থেকে তিনি লন্ডনেই বসবাস করছিলেন।
১৯৬৩ সালে প্র্রবীণ বামপন্থি নেতা মরহুম তাসাদ্দুক আহমদের উদ্যোগে লন্ডন থেকে প্রকাশিত ‘দেশের ডাক’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নিযুক্ত হন তিনি। ১৯৬৫-৬৭ সালের পুরো সময় এবং ৬৭ থেকে ৭১ সালের আংশিক কিছু সময় আব্দুল মতিন পাকিস্তান অবজারভারের লন্ডন প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ব্রিটেনের কমিশন ফর রেসিয়েল ইকুইলিটির ইনফরমেশন অফিসার হিসেবে কাজ করেন তিনি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ব্রিটেনে তার রয়েছে অসামান্য অবদান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার খণ্ডকালীন সংবাদদাতা হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন তিনি।
তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘ইউরোপের দেশে দেশে’ প্রকাশিত হয় ১৯৬০ সালে। ১৯৮৪ সালে ‘জেনেভায় বঙ্গবন্ধু’ নামে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় গ্রন্থ। এরপর নিয়মিতই বের হতে থাকে তার বিভিন্ন গ্রন্থ।
এরমধ্যে ১৯৮৭ সালে ছোট গল্প ‘কাস্তে’, ১৯৮৯ সালে ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রবাসী বাঙালি’, ১৯৯১ সালে ‘প্রবাসীর দৃষ্টিতে বাংলাদেশ’, ১৯৯২ সালে ‘শেখ হাসিনা: একটি রাজনৈতিক আলেখ্য’, ১৯৯৩ সালে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও কয়েকটি প্রাসঙ্গিক বিষয়’, ১৯৯৫ সালে স্মৃতিচারণ: ৫ অধ্যায়’ এবং ‘রুমের উত্থান ও পতন’ উল্লেখযোগ্য। তাঁর সর্বশেষ গ্রন্থ ‘জীবন স্মৃতি একটি বিশেষ অধ্যায়’। বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ছাড়াও জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া সম্পর্কেও তার দু’টি বই রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৩
Link to article
0 comments:
Post a Comment